বিষয়বস্তু

ইন্টারনেট ব্রাউজ করুন আরো দ্রুত ও নিরাপদে

ইন্টারনেট এখন আমাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনি যে এই লেখাটি পড়ছেন সেটাও ইন্টারনেটের মাধ্যমেই। ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য দরকার ইন্টারনেট কানেকশন এবং একটা ব্রাউজারের। আজকে আমি কথা বলব এই ব্রাউজার নিয়েই এবং দেখাবো কিভাবে আপনি আরো দ্রুত, নিরাপদে এবং স্মুথলি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।

1. ব্রাউজার নির্বাচন

প্রথম কাজটি হচ্ছে একটা ব্রাউজার নির্বাচন করা। হ্যাঁ, আমি জানি আপনি অলরেডি একটা ব্রাউজার ব্যাবহার করছেন। সেটা হতে পারে গুগলের ক্রোম, মজিলার ফায়ার ফক্স, বা অন্য কোনো ব্রাউজার। কিন্তু আমি সাজেস্ট করবো ব্রেভ ব্রাউজার ব্যবহার করার জন্য৷ আমি নিজে গত তিন বছর যাবত ব্রেভ ব্যাবহার করছি এবং ব্রাউজারটি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। হয়ত আমাকে এখানে একটু বায়াসড শোনাতে পারে, কিন্ত নিচের কারণগুলোর জন্য আমি মনে করি ব্রেভ ব্রাউজার সেরাঃ

  • ব্রেভ ক্রোমিয়াম বেইজড ব্রাউজার, অর্থাৎ ক্রোমের প্রায় সব কাজ আপনি ব্রেভে করতে পারবেন।

  • ব্রেভ ইন্সটলের মিনিটের মধ্যেই আপনি আপনার সব বুকমার্ক, এক্সটেনশন এবং সেটিংস ক্রোম থেকে ব্রেভে ইমপোর্ট করতে পারবেন।

  • ব্রেভ ক্রোমের চেয়ে ৩ গুন দ্রুত পেজ লোড করে।

  • ব্রেভ ক্রোমের চেয়ে ৩৩-৬৬% কম র‍্যাম দখল করে।

  • ব্রেভ ব্রাউজারে আছে বিল্ট-ইন এডব্লকার এবং শিল্ড যা সকল প্রকার এড ও ট্র‍্যাকার ব্লক করে এবং ব্রাউজারকে করে তোলে আরো নিরাপদ।

  • ব্রেভ ব্রাউজার অন্যান্য ব্রাউজারের চেয়ে ৩৫% কম ব্যাটারি কনজিউম করে।

এখানে বুঝাই যাচ্ছে পারফর্মেন্স এবং নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ব্রাউজারটি তৈরি করা হয়েছে1

নোট
যদি ব্রেভ ব্যাবহার না করে অন্য কোনো ক্রোমিয়াম-বেজড ব্রাউজার ব্যবহার করতে চান, তুবুও আপনি নিচের টিপসগুলো ফলো করতে পারবেন।

2. DNS সার্ভার পরিবর্তন

DNS সার্ভার অনেকটা ফোনবুকের মতো। কোনো ডোমেইনের আইপি এড্রেস কি, ব্রাউজার সেটা জানতে পারে DNS সার্ভার চেক করেই। কিন্তু ব্রাউজার যে ডিফল্ট DNS সার্ভার ব্যবহার করে সেটা অনেকটা স্লো এবং কম নিরাপদ। তাই আমরা এই ডিফল্ট সার্ভারের বদলে কাস্টম DNS সার্ভার ব্যবহার করবো। বিভিন্ন DNS সার্ভারগুলোর মধ্যে আমি Cloudflare (1.1.1.1) রেকমেন্ড করবো কারণ এটা সবচেয়ে ফাস্ট2

ব্রেভে DNS সার্ভার চেঞ্জ করার জন্য এড্রেস বারে brave://settings/security লোড করে অথবা Menu > Settings > Privacy and security > Security যান। এরপর “Use secure DNS” অপশনটি অন করে Cloudflare (1.1.1.1) DNS সার্ভারটি সিলেক্ট করুন।

3. প্রাইভেসি সেটিংস পরিবর্তন

প্রতিটা ব্রাউজেরই কিছু না কিছু প্রাইভেসি সেটিংস আছে যা আপনার নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে পরিবর্তন করা প্রয়োজন। ব্রেভের ক্ষেত্রে,

  • “Trackers & ads blocking” অপশনটি Aggressive মোডে সেট করুন। Settings > Shield > Trackers & ads blocking > Aggressive

  • “Send a “Do Not Track” request with your browsing traffic” অপশনটি অন করুন। Settings > Privacy and security > Cookies and other site data > Send a "Do Not Track" request with your browsing traffic

  • Safe Browsing অপশনে Standard protection অন রাখুন। Settings > Privacy and security > Security

  • “Always use secure connections” অপশনটি অন করুন। Settings > Privacy and security > Security

4. ফ্ল্যাগস

ফ্ল্যাগস হচ্ছে ক্রোমিয়ামের এক্সপেরিমেন্টাল ফিচারস। এক্সপেরিমেন্টাল শুনে ঘাবড়িয়ে যাবার কিছু নেই। আমি নিজে ফ্ল্যাগস ব্যবহার করি এবং এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়নি। তবে না বুঝে কোনো ফ্ল্যাগস ব্যবহার না করাই উত্তম।

ফ্ল্যাগস চালু করার জন্য এড্রেস বারে chrome://flags লোড করুন।

আমি সবাইকে সবসময় এই দুইটা ফ্ল্যাগস রেকমেন্ড করে থাকি-

1. Parallel Downloading

যারা ডাউনলোড ম্যানেজার ব্যবহার করেন তারা জানেন যে ব্রাউজারের ডাউনলোড স্পিড ম্যানেজারগুলোর থেকে অনেক কম। Parallel Downloading চালু করলে আপনি আপনার ব্রাউজারেও ডাউনলোড ম্যানেজারের মতো স্পিড পাবেন। অর্থাৎ, ব্রাউজারের ডাউনলোড স্পিড বাড়াতে হলে এই ফ্ল্যাগসটি অন করুন।

2. Experimental QUIC protocol

QUIC হচ্ছে গুগলের নতুন ট্র্যান্সফার প্রটোকল। ওয়েবকে আর দ্রুত ও কার্যকরী করার উদ্দেশ্যে এই প্রোটোকল ডিজাইন করা হয়েছে। লো ইন্টারনেট স্পিডেও QUIC Protocol অনেক ভালো কাজ করে, তাই ওভারঅল ইন্টারনেট স্পিড বাড়ানোর জন্য এই ফ্ল্যাগসটি অন করুন।

পরিশেষ

এ কয়টি কাজ করলে আপনার ব্রাউজিং এক্সপেরিয়েন্স হবে আগের চেয়ে আরো দ্রূত ও নিরাপদ।